প্রকাশিত: ০৪/০৫/২০১৭ ১০:০৯ পিএম

উখিয়া নিউজ ডেস্ক::

উখিয়া বালুখালীর ইয়াবা মহাজন বার্মাইয়া মাহামুদুল হকের বেপরোয়া চলাচল ও নানা অপকর্মে এলাকার মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। যার হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছেনা এদেশের সাধরন মানুষ। গত ১৭এপ্রিল দুপুর ২টায় মিয়ানমার থেকে বিপুল পরিমাণ ইয়াবার চালান নিয়ে আসার সময় ৩৪ বর্ডারগার্ড ব্যাটালিয়ান আওতাধীন বালুখালী বিজিবি জোযানরা অভিযান চালিয়ে ২৪ হাজার পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করেছে । সীমান্ত পাড়ি দিয়ে এদেশে আসা উদ্বারকৃত ২৪ হাজার ইয়াবা গুলো বালুখালী এলাকার বার্মায়া মাহামুদুল হকের কাছে আসছিলে বলে একটি সূত্রে জানাগেছে।

৩৪ বিজিবি, আওতাধীন বালুখালী সিমান্ত ফাড়ির একটি দল গোপন সুত্রে খবর পেয়ে বালুখালী শিয়ালিয়া পাড়া সংলগ্ন এলাকা অভিযান পরিচালনা করলে বিজিবি উপস্থিতি টের পেয়ে ইয়াবার চালান বহনকারী চত্রেুর সদস্যরা ইয়াবা পেলে পালিয়ে যায়। পরে বিজিবি ২৪ হাজার ইয়াবা আটক উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। স্থানীয় প্রতক্ষদর্শীরা জানিয়েছে আটক ইয়াবা গুলো মিয়ানমারের নাগরিক বালুখালীতে অবস্থানরত বার্মায়া মাহামুদুল হকের।

সে বালুখালীর নুর আহমদের মেয়ে বিয়ে করে বাংলাদেশ অবস্থান করে আসছে দীর্ঘদিন। ওই বার্মায়া মাহামুদুল হক এক সময় পাহাড়ের লাকড়ি সংগ্রহ করে সাংসার চালাত। তিনি এখন ইয়াবা ব্যববসায় বিশাল একটি সেন্ডিকেটে গডে তোলেন, মিয়ানমার থেকে তার আতœীয় স্বজনরা এদেশে তার কাছে ইয়াবা চালান নিয়ে এসে ঢাকা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, উখিয়ার কুতুপালং ও টেকনাফের বিভিন্ন স্থানে অবস্থান করে মরণ ঘাতক ইয়াবা ব্যবসা করে আসছে। যেখানে যে সময় অবস্থান করে, সেখানকার প্রভাবশালী লোকজনের সাথে সখ্যতা গড়ে তুলে অবৈধ ব্যবসা নির্বিঘেœ চালিয়ে যেত। ব্যবহার করতো ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী লোকজন। স্থানীয়দের ছত্রছায়ায় থেকে দাপিয়ে বেড়ায় বার্মায় মাহামুদুল হক। ইতিপূর্বে তার বৃহৎ ইয়াবার চালান আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে আটক হলেও একটি প্রভাবশালী চক্রের তদবিরে মোটা টাকার বিনিময়ে তিনি কৌশলে ছাড়িয়ে এসেছে বলে জনশ্রুতি রয়েছে। ধারাবাহিকতায় বালুখালীতে অবস্থান নিয়ে ইয়াবা ব্যবসা চালাচ্ছিল। গত ১৭ এপ্রিল মাহামুদুল হকের ইয়াবার বৃহৎ চালান আসার খবর পেয়ে বিজিবি আগে থেকে উৎপেতে থাকে। ভাগ্যক্রমে একটি চালান আইনশৃংখা বাহীনির হাতে ধরা পড়লেও বৃহৎ চালান অন্য দিক থেকে কৌশলে সরে পড়ে। মাহামুদুল হকের ইয়াবার চালান বালুখালী যে সময় ঢুকবে, তখনই সীমান্ত এলাকায় বহু ইয়াবা সিন্ডিকেটের সদস্যরা প্রশাসনের টহল দলের গতিবিধি নজরদারি লক্ষ্য করতো। ঠিক ১৭ এপ্রিলের ঘটনাও একই হলেও বৃহৎ ইয়াবার চালানসহ মাহামুদুল হক এবং তার সিন্ডিকেটের লোকজন পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। উক্ত বার্মায় নাগরিক মাহামুদুল হক দীর্ঘদিন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোঁখ ফাঁকি দিয়ে অস্ত্র ,জঙ্গি তৎপরতা ও ইয়াবা পাচারে তৎপর । বার্মায়া মাহামুদুল হকের ইয়াবা বিজিবির আটকের মামলায় আসামী না হওয়ায় থেমে নেই তার অপকর্ম। সে মিয়ানমারের মংডু কুইরখালী এলাকার বাসিন্দা বলে জানা গেছে। সম্প্রতি বালুখালী নতুন রোহিঙ্গা বস্তি আব্দুর রশিদের ষোড়শী যুবতি মেয়ে ইয়াছমিন আক্তার কে মাহামুদুল হকের ছেলে আবদুল আজিজ ধর্ষন করেছিল, ধর্ষিত পরিবারকে মামলা না করার জন্য প্রতিনিয়ত মাহামুদুল হকের ইয়াবা সিন্ডিকেটের সদস্যরা হুমকি দিয়ে আসছে। মাহামুদুল হক কিশোর বয়সে এপার বাংলায় পাড়ি দেয়। উখিয়ার কুতুপালং এবং টেকনাফের লেদা-মুুছনী ও বালুখালী নতুন রোহিঙ্গা বস্তিতে রয়েছে তার আত্মীয় স্বজন। এদেশে বসবাস করা রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে না ফেরার পক্ষে জঙ্গি তৎপরতায় জড়িয়ে পড়ে রোহিঙ্গা যুবক মাহামুদুল হক। বহির্বিশ্বে বসবাস করা রোহিঙ্গা ও (আরএসওর) সমর্থিত এনজিওদের নিকট থেকে অর্থ সংগ্রহ করে রোহিঙ্গাদের মাঝে ত্রান বিতরন করে এবং জঙ্গি অর্থের যোগান দেয়। কৌশলে কালো টাকায় চট্টগ্রামের একটি এলাকায় ভূয়া ঠিকানায়া বাংলাদেশী ভোটার তালিকায় অন্তভুর্ত হয়েছে বলেও জানা গেছে। তার ইয়াবা ব্যবসার অর্থ ব্যয় করা হয় জঙ্গি রোহিঙ্গাদের রসদ সামগ্রী প্রদান, রোহিঙ্গাদের জঙ্গি প্রশিক্ষণ ও অস্ত্র সরবরাহ করার কাজে। আন্তর্জাতিক নেটওয়াক সৃষ্টি করে বার্মায়া মাহামুদুল হক হয়ে যায় দুর্র্ধষ সান্ত্রাসীদের নেতা। তিনি আন্তর্জাতিক ভাবেও কোটি-কোটি টাকা রোহিঙ্গাদের জন্য সংগ্রহ করে আসছে। জঙ্গি তৎপরতা থেকে শুরু করে রোহিঙ্গা জঙ্গিদের বেতন-ভাতা ও অস্ত্রের যোগানদাতা হিসাবে কাজ করে বার্মায়া এই নেতা। মিয়ানমার সরকার বিরোধী বলয় সৃষ্টি করতে স্থানীয় প্রভাবশালীদের নিয়ে কুতুপালং রোহিঙ্গা শিবির, বালুখালী নতুন রোহিঙ্গা বস্তি কেন্দ্রিক গড়ে তুলেন অনন্ত ২শতাধিক রোহিঙ্গার সমন্বয়ে ইয়াবা সিন্ডিকেট।

মিয়ানমার কেন্দ্রিক ইয়াবার বিশাল চালান মজুদ করে এদেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করতে থাকে মাহামুদুল হক। খুব অল্প সময়ে বালুখালীর প্রভাবশালী চক্রের আশ্রয়-প্রশয়ে থেকে চালাতে থাকে হরদম ইয়াবা ব্যবসা। ইয়াবা ব্যবসার আয় থেকে লাখ-লাখ টাকা ব্যয় করা হয় জঙ্গি রোহিঙ্গাদের জন্য। এখানকার প্রভাবশালী লোকজনের সাথে চলাফেরা করতে ব্যয় করাহয় লাখ-লাখ টাকা। এই স্থানীয় জনসাধারনের দাবি এই বার্মায়া মাহামুদুল হক কে গ্রেফতার পূর্বক ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করলে বহু অপকর্মের অজানা তথ্য বেরিয়ে আসবে।

এব্যপারে উখিয়া থানা অফিসার ইনর্চাজ মো: আবুর খায়ের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ইয়াবা সহ মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রনের জন্য আইনশৃঙ্খা বাহীনির সদস্যরা সর্বদা সর্তক রয়েছে। যেখানে ইয়াবা খবর পাওয়া যাচ্ছে সেখানে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। ইয়াবার সাথে জড়িতদের কাউকে ছাড় দেওয়া হচ্ছেনা। অভিযোগ পেলে গ্রেফতার করে আইনের আওয়তায় নিয়ে আসা হচ্ছে।

পাঠকের মতামত